Friday, January 25, 2008

হাদীস কাকে বলে?

হাদীস শব্দের আভিধানিক অর্থ কথা, বাণী, সংবাদ, বিষয়, অভিনব ব্যাপার ইত্যাদি ।

পারিভাষিক ও প্রচলিত অর্থে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথা, কাজ, সমর্থন, আচরণ এমনকি তাঁর দৈহিক ও মানসিক কাঠামো সংক্রান্ত বিবরণকেও হাদীস বলে ।

সাহাবায়ে কিরামের কথা, কাজ ও সমর্থনকেও হাদীস বলা হয় । অবশ্য পরে উসুলে হাদীসে তাঁদের কথা, কাজ ও সমর্থনের নাম দেয়া হয়েছে ‘আসার’ এবং হাদীসে মওকুফ’ এবং তাবেয়ীগণের কথা, কাজ ও সমর্থনের নাম দেয়া হয়েছে ‘ফতোয়া’ ।

মানুষ কিভাবে কুরআন অনুযায়ী জীবন যাপন করবে? কিভাবে সে তার ব্যক্তিজীবন, সামাজিক জীবন ও রাষ্ট্রীয় জীবনের সকল দিক ও বিভাগ পরিচালনা করবে? আর কিভাবেই বা সে কুরআনের আদর্শে নৈতিক কাঠামো এবং সমাজ কাঠামো গড়ার চেষ্টা সাধনা করবে? এসকল বিষয়েই রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নির্দেশনা দিয়েছেন । তিনি তাঁর জীবদ্দশায় এসব বিষয়ে কর্মনীতি কর্মপন্থা অবলম্বন করে দেখিয়েছেন, শিখিয়েছেন, জানিয়েছেন এবং বাস্তবে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন ।

এ প্রসঙ্গে হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছেঃ
“জেনে রাখো, আমাকে আল কুরআন দেয়া হয়েছে আর সেই সাথে দেয়া হয়েছে অনুরূপ আরেকটি জিনিস ।’ (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ্)


কোরআন ও হাদীসের পার্থক্য
কোরআন আল্লাহ্ তা‘লার বাণী, হাদীস আল্লাহর রসুলের বাণী । কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে অহী মাধ্যমে, হাদীস শরীফেরও মূলে রয়েছে সেই একই অহী । কিন্ত পার্থক্য এই যে, কোরআনের ভাব ও ভাষা (Text) দুইই অক্ষরে অক্ষরে আল্লাহ্ তা’আলার কাছ থেকে অহী মারফৎ প্রাপ্ত, যা নামাজের মধ্যে মুসলমানগণ কর্তৃক পাঠ বা তেলাওয়াত করা হয় । তাই কোরআন মাজিদকে অহীয়ে মাতলু বা পঠিত প্রত্যাদেশ! (Inspired Revelation) বলা হয় । কিন্ত হাদীসের বিষয়স্তু (ভাব অর্থ) আল্লাহ্ তা’লার পক্ষ থেকে অহীর মাধ্যমে প্রাপ্ত হলেও জিব্রাঈল (আ) কর্তৃক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে তা পঠিত হয়নি এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সেই পাঠ অবিকল সেই শব্দ বাক্য বিন্যাস সমেত প্রচার করেননি । তাই হাদীস শরীফকে অহীয়ে গায়েরে মাতলু বা অপঠিত প্রত্যাদেশ (Uninspired Revelation) বলা হয় । অহীয়ে গায়রে মাতলুর ক্ষেত্রে আল্লাহর প্রত্যাদেশ প্রথমে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অন্তরে আসে -- পরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মুখ দিয়ে তা তার নিজের ভাষায় প্রকাশিত হয়, আল্লাহ্ তা’আলার ভাষায় নয় ।

No comments: